মৌলভীবাজার সংবাদ প্রতিদিন

মৌলভীবাজার সংবাদ প্রতিদিন

অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি মোঃ শামছুল ইসলাম ও তাঁর জীবনী


মৌলভীবাজার জেলার একমাত্র কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে ও যাবতীয় যোগ্যতার ভিত্তিতে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে সকল কাজের প্রথমেই এগিয়ে রাখা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।


আসুন সময় থাকলে উনার সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করি....


অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি মোঃ শামছুল ইসলাম


মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার ৫নং ব্রাহ্মণ বাজার ইউনিয়নের অন্তর্গত হিংগাজিয়া গাজীপুর গ্রামে ১৯৬৮ সালের ৩০ এপ্রিল পিতা মরহুম

ফুরকান মিয়া ও মাতা মরহুমা নেকজান বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।


শিক্ষা জীবন:


প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা হাতেখড়ি পিতা ও বড় ভাই মাষ্টার হারিছ উদ্দীন সাহেবের কাছে এবং তাদেরই তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। ছয় বছর বয়সে স্থানীয় গাজীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে ১৯৭৬ সালে হিংগাজিয়া সিনিয়র মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ধারাবাহিক লেখাপড়া করে ১৯৮২ সনে হিঙ্গাজিয়া সিনিয়র মাদরাসা থেকে দাখিল, অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৮৪ সনে ১ম বিভাগে আলিম, ১৯৮৬ সনে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসা থেকে ফাজিল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। তারপর কুতুবুল আওলিয়া, শাহ সুফী আল্লামা নেজামুদ্দিন চৌধুরী বিশকুটী (র.) এর দোয়া, অনুমতি ও সার্বিক তত্ত্বাবধানে ১৯৮৭ সালে তিনি ঐতিহ্যবাহী ছারছীনা মাদরাসায় কামিল হাদীস বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৮৮ সালে কামিল হাদীস বিভাগে দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় শ্রেণিতে বি. এ স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।


১৯৯২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে মাস্টার্স প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। 

১৯৯৯ সালে ফরাজিকান্দী আলিয়া মাদরাসা হতে কামিল ফিকহ বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। ২০০০ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে মেধাতালিকায় স্থানসহ প্রথম শ্রেণিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৯৮ সালে হযরত আল্লামা ফুলতলী (রহ.) এর কাছ থেকে দারুল কেরাতের সনদ লাভ করেন।


কর্ম জীবন:


১৯৯৪ সালে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে যোগদান করেন এবং এর পাশাপাশি মৌলভীবাজার কোর্ট জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব হিসেবে দায়িত্বর গ্রহণ করে অদ্যাবধি উক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। ১৯৯৮-২০১০ পর্যন্ত তিনি আরবি প্রভাষক পদে অধ্যাপনা করেন এবং এ সময় মাদরাসার গভর্ণিং বডির দুইবার শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১০-২০১৭ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত তিনি অত্র মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালে মাদরাসার প্রিন্সিপাল মরহুম আল্লামা আব্দুল কাইয়্যুম সিদ্দিকী (রহ.) অবসরে গেলে প্রিন্সিপাল পদ শুন্য হলে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২৩/০৫/২০১৭খ্রি: সালে মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসায় প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে অদ্যাবধি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাছাড়া তিনি বিভাগিয় পর্যায়ে শ্রেষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হন।


মাদরাসার উন্নয়নে তাঁর অবদান:


মাদরাসার উন্নয়নের পেছনে তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচেছন। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাদরাসার অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষত মাদরাসার বর্তমান অবকাঠামোগত উন্নয়নে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। যেমন:


★ তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদরাসার পশ্চিম সীমানায় দুতলা বিশিষ্ট বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ,

★ শিক্ষক কমনরুম ভবনের ঊর্ধ্বমুখী তৃতীয় তলা সম্প্রসারণ,

★ চার তলা বিশিষ্ট দারুল হাদিস ভবন নির্মাণ অন্যতম।

★ কামিল এমপিওভুক্তি,

★ অনার্স কোর্স (এক বছর মেয়াদী) আল হাদীস & ইসলামিক স্টাডিজ।  

★ এক বছর মেয়াদী মাস্টার্স কোর্স চালু এবং

★ ফিকহ বিভাগ তাঁরই প্রচেষ্টার ফসল।


শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয় বরং বর্তমান প্রিন্সিপাল মহোদয় লেখাপড়ার মানোন্নয়নে ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠানটি সিলেট বিভাগের অন্যতম একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে।


পাগড়ীদান অনুষ্ঠান (২০২৫):


তাঁর উল্লেখযোগ্য আরেকটি কাজ হচ্ছে ১৯৯৮-২০২২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫ বছরের কামিল হাদীস উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক পাগড়ীদান, ওয়াজ ও দু'আ অনুষ্ঠানের আয়োজন, এরকম ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান ইতিপূর্বে এ প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হয়নি। এটি মুহতারাম অধ্যক্ষ মহোদয়ের এক সাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আমরা তাঁর এই পদক্ষেপে চিরকৃতজ্ঞ।


তাঁর কৃতিত্ব:


জনাব অধ্যক্ষ মহোদয় ১৯৯৯ থেকে তাঁর পীর ও মুর্শিদ আল্লামা ফুলতলী (রহ.) প্রতিষ্টিত দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রষ্ট্রের অধীনে কুরআনের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রিন্সিপাল মহোদয়ের ব্যক্তিগত যোগ্যতার পাশাপাশি আরও সামাজিক কৃতিত্ব রয়েছে। যেমন- 

★ ২০০৬ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে ইমাম প্রশিক্ষণে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার সে সৌভাগ্য অর্জন কারেন। 

★ জাতীয় শ্রেষ্ঠ ইমাম নির্বাচিত হয়েছেন। 


তিনি শিক্ষকতা ও প্রশাসনিক দায়িত্বে অধিকতর যোগ্যতা অর্জনের লক্ষে বেশ কিছু প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

★ বৃটিশ কাউন্সিলের প্রশিক্ষণ।

★ বিএমটিটিআই থেকে একাধিকবার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।


তিনি একাধারে একজন দক্ষ সংগঠক, জেলার অনেক সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন।আলহামদুলিললাহ

All in all ফেইসবুক থেকে সংগ্রহ 

Post a Comment

0 Comments