মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মতিন বক্সের প্রাথমিক সদস্য পদ স্থগিত করা হয়েছে।
দলীয় নীতি ও সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা
শুক্রবার, ২২ আগস্ট—বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, মতিন বক্সের বিরুদ্ধে দলীয় নীতি পরিপন্থী এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষা ও সাংগঠনিক স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মতিন বক্সের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে পদ স্থগিতের প্রতিক্রিয়ায় মতিন বক্স জানান—
"আমি টানা ৪২ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ৫ বার জেল খেটেছি। যুব দলের থানা সভাপতি থেকেছি, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। কেন্দ্রীয় যুবদলের সিলেট বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছি এবং সর্বশেষ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।"
তিনি আরও বলেন—
"দল হয়তো আমার কিছু কর্মকাণ্ড পছন্দ করেনি, তাই পদ স্থগিত করেছে। তবে আমি কোনো কাজ করিনি যা দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে। আমার কোনো আক্ষেপ নেই—আমি ধানের শীষেই ভোট দেব, অন্য কোনো দলে যাব না।”
রাজনৈতিক দায়িত্ব ও ইতিহাস
রাজনৈতিক জীবনে মতিন বক্স নানা সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন—
১৯৮৮ সালে থানা যুবদলের সভাপতি,
২০০১ সালে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক,
২০১২ সালে কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ),
এবং ২০১৯ সালে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।
আন্দোলন-সংগ্রাম ও কারাবরণ
আন্দোলন-সংগ্রামের কারণে তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন—
১৯৯৮ সালে হরতাল চলাকালে প্রথমবার গ্রেপ্তার,
২০১১ সালে খালেদা জিয়ার বাড়ি উচ্ছেদবিরোধী হরতালে দ্বিতীয়বার,
২০১৫ সালে পুলিশ এসল্ট মামলায় তৃতীয়বার,
২০১৭ সালে একই অভিযোগে কোর্ট ওয়ারেন্টে চতুর্থবার,
আর সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমর্থনে লেখালেখির কারণে গ্রেপ্তার হন। পরে নির্বাহী আদেশে ৬ আগস্ট মুক্তি পান।
দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, আন্দোলন-সংগ্রাম ও কারাবাসের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও—
দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে মতিন বক্সের পদ স্থগিত হওয়ায় মৌলভীবাজারের রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে তুমুল আলোচনা।
0 Comments