মৌলভীবাজার জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ইসহাক আহমেদ চৌধুরী মামনুনকে অন্যায়ভাবে ও পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোন কারণ দর্শানো ছাড়া সেচ্ছাসেবক দল মৌলভীবাজার জেলা শাখা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে “দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত” থাকার অভিযোগ এনে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে বুধবার সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেন তিনি।
ইসহাক আহমেদ চৌধুরী মামনুন সাংবাদিকদেরকে জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দল মৌলভীবাজার জেলা শাখা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়কসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে “দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকান্ডে জড়িত” থাকার অভিযোগ এনে বহিষ্কার করা হয়েছে। মূলত তার বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ এর সত্যতা সম্পর্কে অবহিত করাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে পৌছে দেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেন। তিনি আশা করেন প্রিন্ট/ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলে সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের বিষয়টি দেশনায়ক তারেক রহমানসহ সবাইকে অবগত হবেন।
তিনি আরো জানান, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রজীবনেই “শিক্ষা ঐক্য প্রগতি”র পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এর রাজনীতিতে যোগদান করেন। ছাত্রদলের রাজনীতি করা অবস্থায় বিগত ২০১১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাত্রদলের রাজনীতি করা অবস্থায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের সকল অগণতান্ত্রিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে দলীয় সকল কর্মসূচিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্রদলের রাজনীতি করা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হামলা হয়েছিল। এইসব মামলায় তিনি বিভিন্ন মেয়াদে মাসের পর মাস শেখ হাসিনার কারাগারে ছিলেন। মামলা হামলা নির্যাতনের পরও তিনি জাতীয়তাবাদের আদর্শ থেকে নূন্যতম বিচ্যুত হইনি। বরং জেল জুলুম নির্যাতন তার মনোবল আরো বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতি পরবর্তী সে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতিতে যুক্ত হন। সেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতিতে আমার সক্রিয় কর্মকান্ড প্রতিদান স্বরুপ তাদের নেতা তারুণ্যের অহংকার দেশনায়ক তারেক রহমান বিগত ২০/০৪/২০২২ ইং তারিখে সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করলে সে উক্ত কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়। সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার নিজ জেলা মৌলভীবাজারে সেচ্ছাসেবক দলকে একটি সুসংগঠিত সংগঠনে পরিণত করতে তার সাধ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ কাজ কওে সে। বিগত ১৪/০৮/২০২৩ ইং তারিখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দল মৌলভীবাজার জেলা শাখার ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠিত হলে তাকে উক্ত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত করা হয়। ততপরবর্তীতে বিগত ১১/১০/২০২৩ইং তারিখে কেন্দ্র ঘোষিত ৫১ সদস্য বিশিষ্ট মৌলভীবাজার জেলা সেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক গঠন করা হয়।
মামনুন আরো বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি নির্বাচিত হওয়া থেকে, সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং মৌলভীবাজার জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল অবৈধ দখলদার স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের রাজপথে যতগুলো আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে সবগুলো আন্দোলন সংগ্রামে তিনি সামনের সারিতে ছিলেন। বিশেষ করে বিগত ডামি নির্বাচনের বিরুদ্ধে বিএনপি ঘোষিত অনেক কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে তার নেতৃত্বে মৌলভীবাজারের রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম পালন হয়েছে। যা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নজর কেড়েছে। কঠিন সময়ে এই কর্মসূচি পালন করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার প্রশাসন তাকে দমিয়ে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। বিগত জুলাই আগস্ট বিপ্লবে মৌলভীবাজারের রাজপথে যতগুলা আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে সবগুলাতেই তার উপস্থিতি ছিল সরব ছিল ছাত্র-জনতার সাথে। বিশেষ করে ৪ আগস্ট ছাত্র জনতা মৌলভীবাজার শহরে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরকে প্রতিহত করতে ছাত্র জনতার সাথে ছিল। যার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে রয়েছে। তার রাজনৈতিক জীবনে কোন দিন তার বিরুদ্ধে দখলবাজি, চাদাঁবাজি, টেন্ডারবাজি এমনকি অবৈধ কোন পন্থায় অর্থ উপার্জনের তিল পরিমাণ কোন অভিযোগ নেই। আর এটা তার পারিবারিক শিক্ষার একটা অংশ বটে। সুতরাং যেকোন কিছুতেই অবৈধ পন্থা অবলম্বন করা তার পক্ষে অসম্ভব। তাই সে উক্ত বিষয়টি এখন দেশবাসীর সামনে পরিষ্কার করছে। তার বহিষ্কারের সাথে বিভিন্ন অবৈধ পন্থা জড়িত আছে বলে জানান। বিগত ১৩/০৩/২০২৫ইং তারিখে মৌলভীবাজার জেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়কের পদ স্থগিত করা হলে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব পাওয়ার দাবীদার এবং এটা দলীয় কাঠামোরও অংশ। আহবায়ককে বহিষ্কার করার পর জেলায় সেচ্ছাসেবক দলের কার্যক্রমে কিছুটা অস্থিতিশিথীলতা দেখা দিলে সংগঠনের স্বার্থে, সে উক্ত ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেত্রীবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করলে তারা নানান অজুহাত দেখাতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত আহবায়কের দায়িত্ব প্রদানের স্বার্থে দলের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক টিমের প্রধান ডা. জাহিদ কবির এর কিছু অনৈতিক আচরণে নানা রকম সন্ধেহের সৃষ্টি হয়। ফলে উনার সাথে মামনুনের কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক এর দায়িত্ব প্রদান করতে সময় বিলম্ব হওয়ায় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের কর্মকান্ড নামমাত্র পরিচালিত হচ্ছে। এক দিকে আহবায়ক এর পদ স্থগিত, অন্যদিকে তার সাথে কেন্দ্রের দূরত্ব বিষয়টি পূঁজি করে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক টিমের প্রধান ডা. জাহিদুল কবির কে ম্যানেজ করে মৌলভীবাজার জেলায় সদস্য সচিবের বলয় সৃষ্টি করার জন্য একতরফা ভাবে বিভিন্ন উপজেলায় সেচ্ছাসেবক দলের কর্মি সভার আয়োজন করেন। বিগত ৩০/০৮/২০২৫ তারিখের রাজনগর উপজেলার সেচ্ছাসেবক দলের কর্মি সভার তারিখ সদস্য সচিব একক ভাবে ঘোষণা করলে বিগত ২৯/০৮/২০২৫ ইং তারিখ সন্ধ্যায় স্থানীয় সেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করে। তারপ্রেক্ষিতে সাংগঠনিক টিমের প্রধান রাত অনুমান ৯:০০ ঘটিকার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে রাজনগর উপজেলা ও কমলগঞ্জ পৌরসভার কর্মীর কর্মীসভায় ৩০/০৮/২০২৫ ইং তারিখে উপস্থিত থাকার জন্য বলেন, সে উনার কাছে পূর্বে অবহিত না করা, তারিখ নির্ধারণের ব্যাপারে তার সাথে কোন পূর্বালোচনা না করার কারণ জানতে চাইলে এবং স্বল্প সময়ের ভিতরে উল্লেখিত ইউনিটগুলোর ত্যাগী, পরীক্ষিত ও দীর্ঘ দিনের রাজপথের সক্রিয় কর্মীদের দাওয়াত করা তার পক্ষে অসম্ভব উল্লেখ করায়, সাংগঠনিক টিমের প্রধান তার সাথে অসৌজন্যমূলক ও অসাংগঠনিক আচরণ করেন এবং সেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতি দেখে নিবেন বলে তাকে হুমকী প্রদান করে ফোন কেটে দেন। সাংগঠনিক টিমের প্রধান ও জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব একক ভাবে ত্যাগী, নির্যাতিতদের বাদ দিয়ে রাজনগর উপজেলার কর্মীসভা স্থানীয় ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাধার মুখে কর্মীসভা করতে ব্যর্থ হয়ে নিজেদের ব্যর্থতার দায়, তার উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তিনি জানান, সাংগঠনিক টিমের প্রধান বিগত ৩০/০৮/২০২৫ ইং তারিখে রাঙ্গাউটি রিসোর্টে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাসহ জেলা সেচ্ছাসেবক দলের পদ স্থগিত সাবেক আহবায়ককে নিয়ে ছবি তুলে উক্ত ছবি তাহার ব্যক্তিগত আইডি থেকে পোস্ট করেন। জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবের অসাংগঠনিক একক বলয় সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিশাল ষড়যন্ত্রের শামিল হয়ে সাংগঠনিক টিমের প্রধান ডা. জাহিদুল কবির মূলত কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল নেতাদেরকে ভুল বুঝিয়ে এবং নিজের ব্যর্থতার দায় এড়ানোর জন্য তাকে বহিষ্কার করেছেন। তার এই বহিষ্কার সম্পূর্ণ দলীয় গঠনতন্ত্র পরিপন্থি। দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজের অভিযোগ এনে তাকে বহিষ্কার করা হলেও কি শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ তার সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না করে এমনকি তাকে কারণ দর্শানোর জন্য কোন সুযোগ না দিয়ে কিংবা আত্বপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া ছাড়া বহিষ্কার কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী আদর্শের সকল নেতৃবৃন্দসহ তার নেতা তারুণ্যের অহংকার, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে বিচার প্রার্থী হন তিনি। হঠাৎ করে তাকে স্থায়ী বহিষ্কার করায় তিনি হতভম্ব হয়েছেন। তার স্থায়ী বহিষ্কারের খবরে জেলা সেচ্ছাসেবক দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত, রাজপথের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোপ প্রভাব পড়েছে। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। বিভিন্ন কর্মীসভা নিয়ে উনাদের অসাংগঠনিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় মূলত তাকে বহিষ্কার করে তার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে, তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে এর বিচার চান ও আশা করেন নেতা তারেক রহমান এর নজরে বিষয়টি আসলে, তিনি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে তার প্রতি এই অবিচার, বৈষ্যম্যমূলক আচরণের বিচার পাবেন। সেচ্ছাসেবক দলের জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক পদসহ প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হলেও, সে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের আদর্শের রাজনীতি - জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত পালন করবে বলে জানান। তার রক্তের রন্দ্রে রন্দ্রে জাতীয়তাবাদের আদর্শ বিদ্যমান। তিনি মনে করেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ প্রচার করলে তার বহিষ্কার এর প্রকৃত রহস্যটি বের হয়ে আসবে।

0 Comments